আজকাল নিত্যনৈমিত্তিক রান্নাবান্নার কাজে মাইক্রোওভেন বেশ প্রয়োজনীয় একটি যন্ত্র হয়ে উঠেছে৷ দিনদিন বাংলাদেশেও এর ব্যবহার বাড়ছে৷ আগে যেখানে ফ্রিজ ছিল মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য একটি স্বপ্নের অংশ, আজ সেখানে মাইক্রোওয়েভ ওভেন কেনার জন্য মধ্যবিত্তরা ভাবছে৷ কিন্তু কিভাবে কাজ করে এই মাইক্রোওয়েভ ওভেন? সাধারণ ওভেনে যেখানে খাবারকে সাধারণভাবে গরম করা হয়, সেখানে মাইক্রোওয়েভ ওভেন দিয়ে খুব দ্রুত কিভাবেই বা খাবারকে গরম করা হয়? আসুন জেনে নেই এসব প্রশ্নের উত্তর।
মাইক্রোওয়েভ ওভেন দিয়ে যে খাবার গরম করা হয় তার মধ্যে পানির অংশ থাকতে হবে৷ মাইক্রোওয়েভ ওভেন দিয়ে খুব দ্রুত পরিবর্তনশীল ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক ফিল্ড দেয়া হয়৷ পানির অণুতে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক অংশ থাকে৷ মাইক্রোওয়েভ ওভেন এর এই ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড পানির কণাগুলিকে খুব দ্রুত দিক পরিবর্তন করতে থাকে, যা সাধারণত প্রতিসেকেন্ডে ২৪৫০ মিলিয়ন বার কাঁপাতে সক্ষম হয়৷ এত দ্রুত পানির কণাগুলি কাঁপতে থাকলে এতে তাপশক্তি উৎপন্ন হয় এবং সেই শক্তি দিয়ে তা গরম হয়৷ খাবারের ভিতর যে পানি থাকে তাই গরম হয় এবং এইভাবেই পুরো খাবারটি গরম হয়৷ আসলে খাবারের ভিতর যে পানি থাকে তাই গরম হয়৷ তাই যে সমস্ত খাবারে খুব কম পানি থাকে তা তুলনামূলক ভাবে কম গরম হয়৷ কাচের গ্লাস কিংবা চিনামাটির প্লেট মাইক্রোওয়েভ ওভেন এ গরম হয়না, কেননা এইগুলির মধ্যে পানির কণা থাকে না৷ প্লাস্টিক ও কাগজ জাতীয় বস্তুর ভিতর দিয়ে মাইক্রোওয়েভ চলে যায় বলে গরম হয়না৷ আর লোহা কিংবা ধাতু জাতীয় বস্তু মাইক্রোওয়েভ প্রতিফলন করে বলে খাবার গরম করবার সময় চামচ কিংবা কোন ধাতু দিতে হয়না৷
সাধারণ ওভেন এর থেকে মাইক্রোওয়েভ ওভেনের সবথেকে বড় যে সুবিধা কাজ করে তা হল, সাধারণ ওভেনে বাহিরের দিকে খাবার গরম হলেও মাইক্রোওয়েভ ওভেন খাবারের ভিতরও গরম করে বলে পুরো খাবারটি গরম হয়।
আজকাল নতুন ধরনের মাইক্রোওয়েভ ওভেন বাজারে এসেছে যা দিয়ে শুধু মাত্র খাবার গরম করাই নয়, খাবার তৈরীও করা যায়। সামনে হয়ত এমনও দিন আসবে, যখন মাত্র একমিনিটে ওভেন দিয়ে তৈরী করে ফেলতে পারবেন পোলাও, কোরমা জাতীয় খাবার৷