ঘুম-কাতর, আলসে আর ঘুমের কারণে সব সময় লেট লতিফ বলে যাঁদের খানিক বদনাম ছিল, সাম্প্রতিক এক গবেষণা জরিপের অজুহাত দেখিয়ে এখন কিন্তু তাঁরা এর সপক্ষে যুক্তি দাঁড় করাতেই পারেন। বলতে পারেন, এটি তো ভাই আমার হাতে নেই। ঘুমের দায় আমার জিনের। সম্প্রতি এ ‘ঘুমতত্ত্ব’ নিয়ে গবেষণায় ইউরোপের ১০ হাজারেরও বেশি মানুষের ওপর এক জরিপ চালান বিশেষজ্ঞরা।
প্রকাশিত ওই জরিপের তথ্য বলছে, যারা বেশি ঘুমান গবেষণায় তাদের শরীরে এবিসিসি৯ জিন পাওয়া গেছে। আর যাদের শরীরে এই জিন আছে তারা রাতে অন্যদের চেয়ে বেশি ঘুমান। প্রত্যেকের ঘুমের বিষয়টি তাদের রক্তের ডিএনএ পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে। গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে মলিক্যুলার সাইকিয়াট্রিতে।
গবেষকেরা বলছেন, রাতে ঘুমের মধ্যেই এই জিনের কার্যকারিতা বাড়ে, সে কারণেই এ বেশি ঘুম। প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন ইউরোপীয়র মধ্যে এই জিন পাওয়া গেছে। গবেষকেরা বলেছেন, ঘুমের প্রয়োজন একেক জনের জন্য একেক রকম। আর এ কারণেই মার্গারেট থ্যাচার রাতে মাত্র চার ঘণ্টা ঘুমাতেন। আর অ্যালবার্ট আইনস্টাইন ঘুমাতেন ১১ ঘণ্টা।
নেদারল্যান্ড, ইতালি, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশের নারী-পুরুষের ওপর এ জরিপ চালানো হয়। জরিপে অংশগ্রহণকারীরা গবেষকদের জানান যে তাঁরা কয় ঘণ্টা ঘুমান। অনেকেই বলেছেন, সাধারণত ছুটির দিনে তাঁরা বেশি ঘুমান। দেখা গেছে, যাদের শরীরে এবিসিসি৯ জিন রয়েছে তারা আট ঘণ্টারও বেশি সময় ঘুমান।
এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্য বিজ্ঞান কেন্দ্রের গবেষক জিম উইলসন বলেন, মানুষ তার জীবনের এক-তৃতীয়াংশ সময় ঘুমিয়ে কাটায়। তবে বয়স, আবহাওয়া—এসব কারণে মানুষ অনেক সময় বেশি ঘুমায়। ঘুম-বিশেষজ্ঞ নেইল স্ট্যানলি বলেছেন, ঘুমের পরিমাণ মানুষের স্বাস্থ্য ও আচরণে প্রভাব ফেলে। তিনি বলেন, প্রায় ছয়টি জিনের সঙ্গে ঘুমের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। আর মানুষের আচরণে এসব জিনের প্রভাব খুবই কৌতূহলোদ্দীপক।
তথ্যসূত্র: প্রথম আলো এবং প্রযুক্তি বার্তা




































