সৃষ্টিতত্ত (cosmology) ও মহাবিশ্বের দুরতম অঞ্চলগুলো সম্পর্কে আমরা খুব কমই জানতে পেরেছি।এর পেছনে সবচেয়ে বড় কারন হল আমাদের প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা।এ ছাড়াও আলোর গতির সীমাবদ্ধতার কারনেও আমরা এ সকল অঞ্চলগুলো সম্পর্কে এখনো ভাল মত জানি না।তবে আমাদের অর্জন ও কম না।আমরা ইতিমধেই আন্তঃনাক্ষত্রিক মহাকাশ অভিযান এর জন্য প্রস্তুত হতে পেরেছি।এও বা কম কি?তবে যাই হোক সে আলোচনা আর বাড়াবো না।এবার আমরা লক্ষ করব গ্যালাক্সিগুলোর দিকে।নিউটনের মহাকর্ষ বলের( gravitational force ) সুত্রগুলি যদি আমারা গ্যালাক্সিগুলোর উপর প্রয়োগ করি , তাহলে দেখা যাবে যে, গ্যালাক্সিগুলোর চারিদিকে ছরিয়ে ছিটিয়ে পরার কথা।কিন্তু আমরা জানি গ্যালাক্সি বা তারকাপুঞ্জের ভেতরের বস্তুগুল একটি কেন্দ্রিয় বিন্দুর উপর নির্ভর করে ঘুরতেছে।কারন তাদের পারস্পারিক আকর্ষণ এক ধরনের কন্দ্রাতিক(centripetal) শক্তির সৃষ্টি করে থাকে।অবাক হবার কথা হল হিসাব করে দেখা গেছে এ ধরনের ঘূর্ণন সৃষ্টি করার মত পর্যাপ্ত বস্তু এসব গ্যালাক্সিগুলোর নেই।এই ব্যাপারটি ১৯৭০ এর দশকে ওয়াশিংটন ডিসি-এর কার্নেগী ইন্সটিটিউশনের গবেষক ভেরা রুবিন(Vera Rubin) সর্বপ্রথম লক্ষ করেন।
এখন সবারই মনে প্রশ্ন জাগছে কেন তাহলে এই গ্যালাক্সিগুলো এই রকম ঘূর্ণন প্রদর্শন করে।পদার্থবিদরা জানিয়েছেন আমরা যতটা বস্তু এই গ্যালাক্সিগুলোতে দেখছি, প্রকৃতপক্ষে তার চেয়েও অনেক বেশি বস্তু এখানে রয়েছে।যার ফলে এরকম ঘূর্ণন সম্ভব হচ্ছে।কিন্তু এই ডার্ক ম্যাটার বা না দেখা বস্তুগুলো আসলে কি?কেউ এর সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পারেন নি।এমনকি আজপর্যন্তও এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় নি।তবে ডার্ক ম্যাটার গড়ে উঠার জন্য কি ধরনের কনার অস্তিত্ব ওখানে রয়েছে সে ব্যাপারে গবেষকরা মত প্রকাশ করেছেন।কিন্তু তাদের মতের মধ্যে প্রচুর ভিন্নতা রয়েছে।বিবিধ পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে মহাবিশ্বের শতকরা ৯০-৯৫% হল এই ডার্ক ম্যাটার বা না দেখা বস্তু।কিন্তু আমরা এই বিশাল পরিমান বস্তু সম্পর্কে এখনো ভীষণ পরিমান অজ্ঞ।তাই আমাদের জ্ঞান-বিজ্ঞান এর জগতে ডার্ক ম্যাটার এখনো অনেক বড় একটা প্রশ্নবদক চিহ্ন।এ সম্পর্কে আরও ভাল ভাবে জানতে হলে আমাদেরকে তাত্তিক পদার্থবিজ্ঞান ও জ্যোতির্বিদ্যায় আরও ভাল মত পারদর্শী হতে হবে।হয়তো অদুর ভবিষ্যতে আমারা জেনে যাব সকল প্রশ্নের উত্তর।
[plulz_social_like width="350" send="false" font="arial" action="like" layout="standard" faces="false" ]