টেট্রানিউট্রন(Tetraneutron) রহস্য !

আমাদের দৃশ্যমান জগতের সবকিছুই কিছু মৌলিক  কণা দ্বারা ঘঠিত। এগুলোর কিছু কিছু আছে স্থায়ী,আবার এদের বেশিরভাগই অস্থায়ী। যাই হোক, আসল কথায় আসি, আজ থেকে প্রায় দশ বৎসর আগে ফ্রান্সের একটি পার্টিক্যল অ্যাকসিলারেটরে(Particle accelerator)–এর  সাহায্যে এমন ছয়টি কণা শনাক্ত করা হয় যেগুলোর অস্তিত্ত থাকা উচিৎ নয়। এগুলোর নাম ট্রেট্টানিউট্রন। এদের চারটি করে নিউট্রন এমনভাবে সংযুক্ত যা পদার্থবিদ্যার নিয়মনীতিকে অগ্রায্য করে।

পার্টিক্যল অ্যাকসিলারেটরে টেট্রানিউট্রন এর অস্তিত্ব পরিক্ষা করা হচ্ছে

ফ্রান্সিস্ককো মিগুয়েল মার্কুইস ও তার  সহকর্মিরা বিষয়টি পুনরায় পরীক্ষা করে দেখতে চান।গবেষক দলটি একটি beryllium নিউক্লিয়াস,একটি ক্ষুদ্র কার্বন লক্ষ্যবস্তুর দিকে ছোড়েন  এবং এর ফলে চতুর্পাস্থ  কণা  Detector-এ জমে ওঠা ময়লার বিশ্লেষন করে দেখেন। তাদের প্রত্যাশা ছিল যে তারা চারটি আলাদা নিউট্রনকে আঘাত করতে দেখবেন। কিন্তু তারা দেখলেন একটি ডিটেক্টটরে একটি আলোর ঝলক। এ আলোর ঝলক দেখে বুঝা যায় যে চারটি নিউট্রন Detector এ পৌছেছে একসাথে।চারটি নিউট্রন একই সময়ে একই স্থানে এসে মিলিত হয়েছে বিষয়টি হাস্যকরভাবে অসম্ভব। তার মানে
কণিকাগুলো অবশ্যই একইসাথে যুক্ত ছিল,ঠিক যেমন নিয়ক্লিয়াসে প্রোটন আর নিউট্রন থাকে।কিন্তু বাস্তবে এটি একেবারেই অসম্ভব বিষয়,কারন কণাবাদী পদার্থবিদ্যার মতে টেট্রানিউট্রন এর অস্তিও থাকা সম্ভব নয়।পাউলির বর্জন নীতি(Pauli exclusion) অনুসারে একই পদ্ধতিতে দুটো প্রোটন বা দুটো  নিঊট্রন(পারত পক্ষে এটা যেকোন Subatomic particle এর জন্য প্রযোজ্য)এর অভিন্ন কোয়ান্টাম বৈশিষ্ট থাকতে পারে না।তারমানে যে শক্তি এদেরকে একসাথে ধরে রাখবে সেটার এমন বৈশিষ্ট যে তা দুটি নিউট্রনকে একসাথে ধরে রাখতে পারবে না। আর চারটিতো আরো অসম্ভব।এখানে আরও কিছু কথা বলে রাখা ভাল; আমরা যদি ধরে নেই যে এই কনিকাটি বিদ্যমান তাহলে আমদের পদার্থবিজ্ঞানের মূল কিছু নীতিকে আগাহ্য করা হবে।তার মানে আমাদের ধরে নিতে হবে যে, বিগ ব্যাঙ এর অব্যাহতির পরে গড়ে ওঠা পদার্থগুলো বর্তমানে আমারা যা দেখছি তার সাথে সমন্বিত ছিল না।এবং এই পদার্থগুলো এত দ্রুত ভারী হয়ে ওঠতো  যে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড তা ধরে রাখতে পারত না। সারে বিশ্ববিদ্যালেয়ের গবেষক নাতালিয়া টিমেফেঊক বলেন এমতাবস্থায় মহাবিশ্ব প্রসারিত হবার আগেই ভেঙ্গে পড়ত।

 তবে যাই হোক, একাধিক নিউট্রন দ্বারা গঠিত বস্তুর উদাহরণ আমাদের কাছে আরো আছে। যেমন - নিউট্রন তারকা বা পালসার। পালসার সমপর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। আর পালসার ও টেট্রানিউট্রনের অস্তিত্ত থেকে বোঝা যায় যে নিউট্রনগুলো দলবদ্ধ হবার পেছনে রয়েছে অজানা কোন শক্তি।

[plulz_social_like width="350" send="false" font="arial" action="like" layout="standard" faces="false" ]

লিখাটি নিয়ে আপনার অভিমত কি?

2 COMMENTS