আমি লাস্ট কবে আমার টেক্সটবুক খুলছি মনে আছে আমার। মনে থাকার কারণও আছে। কেননা আমি কদাচিৎ এই কাজটি করে থাকি। লাস্ট বই খুলেছি ঈদের ছুটিতে বাসায় আসার আগে। ২তারিখে!
“আমরা টেক্সটবুক পড়তে চাইনা। কেননা ওগুলোতে মজা নাই। ওগুলো বস্তা বন্ধী করে ফেলে রাখলেই বোধহয় অনেক শান্তি পেতাম।”—এই ভাবনা আমাদের বেশিরভাগের। কেউ কেউ অবশ্য অন্য জগতের প্রাণী। তারা টেক্সটবই পড়ে মজা পায়।
আসুন একটি গল্প শুনা যাক।
একবার এক উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শনে এক শিক্ষা অফিসার আসলেন। ৯ম শ্রেণীতে গেলেন। সেখানে একটি প্রশ্ন করলেন যে, বিশ্বের সবচেয়ে ছোট কিন্তু অনেক গুরুত্বপূর্ণ শহরটির নাম কি?
কেউ জানেনা। প্রথম-সারির স্টুডেন্টরা কনফিউশানের জন্য বলতে পারছেনা। মাঝারী সারির এক ছাত্র বলে দিল সঠিক উত্তর।
সবাই অবাক হল। ও তো পারার কথা নয়! পারলো কেমনে!
তাকে জিজ্ঞেস করে পরে জানা গেল মূল রহস্য। কারণ গোয়েন্দা বই। প্রশংসার সাথে কিছুটা বৎসনাও জুটলো তার কপালে।
রহস্যটা রহস্যই থাক। আপনারা যারা গল্পের বই এবং গোয়েন্দা বই পড়ে থাকেন তারা প্রশ্নের জবাব তা দিয়ে দিবেন কষ্ট করে। পারলে বইয়ের নাম সহ। :p
যাই হোক মূল কথায় আছি। আমাদের পাঠ্য বই ভালো লাগেনা। পদার্থ, রসায়ন বড়ই অখাদ্য। রসায়ন নাম হলেও রসের বড়ই অভাব।
কিন্তু প্রশ্ন হল আসলেই কি এতটা বিরক্তিকর এই বিষয়গুলো?
আমার মতে না এতটা না, যতটা মনে হয়। মনে হবার কারণ আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা। আরে প্রতিদিন গরুর মাংসও তো বিরক্ত লাগে, পেট খারাপ হয়। সেখানে এইসব বোঝা সরূপ পড়া বড়ই তিক্ত।
কিন্তু কথনও কি ভেবে দেখেছেন এই পড়ায়ও যে অনেক মজা লুকিয়ে আছে? প্রশ্ন করতে পারেন কিভাবে? প্রমাণ দিতে পারবো আমি।
এই পোষ্টগুলো দেখুন বুঝবেন। SSC, HSC এর বইয়ের টপিক। কিন্তু আমরা এখানে ভালোই মজা পাচ্ছি পড়ে। কিন্তু বইতে সে মজা কোথায়!
আসলে আমাদের মনে ঢুকে গেছেযে পাঠ্যবই একটা বোঝা। তাই মজা পাইনা আমরা। কিন্তু একটু চেষ্টা করলেই মজা নিতে পারি আমরা। সেই জন্যেই আমার এই লিখাটি।
কোন কিছুতে মজা পাওয়ার প্রথম শর্ত হল ভয় দূর করতে হবে। ধরুন আমি পদার্থ অনেক ভয় পাই। এখন প্রথম কাজ এর থেকে ভয়মুক্ত হওয়া। কিভাবে হবেন?
১. পদার্থে খুব মজার কিছু টপিকস আছে। সেগুলো খুঁজে বের করুন। খুঁজতে গেলেই আরও মজার মজার টপিকস পাবেন। যেমন ধরেন ভেক্টর। এতে মজা কি? আমরা কি জানি ভেক্টর আসলে কি কাজে লাগে? যদি না জানি তাহলে এতে আমার মজা পাওয়ার কোন কারণ নেই।
* আমরা অনেক সময় হাটার সময় শর্টকাট রাস্তা ধরি। কেননা তাতে দ্রুত পৌছাতে পারি এবং কষ্টও কম। আপনি কি জানেন এটা ভেক্টরের একটা ব্যাপার? জ্যামিতিরও বটে। ভেক্টরে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে এইগুলোই করা হয়। ডান থেকে স্রোত, বাম দিকে নৌকো। এপার থেকে ওপারে গেলে কত কোণ করে যাবে? এমন মজার প্রশ্ন ভেক্টরে।
* গতিতে আর মহাকর্ষে আরও মজা। একটা গল্প শুনেছিলাম। তার মাথায় একটা পাথর পরে উপর থেকে। পাথর পরে তো মাথা ফাটলো। গর্তও হল একটু। তিনি করলেন কি গর্তটা মেপে রাখলেন ডাক্তারকে বলে। বলে হাসপাতালে তার ছাত্ররা তাকে দেখতে গেলে হেসে জানালে ৩ তলা থেকে পড়েছে পাথরটা। তারা বললো কেমনে বললেন স্যার দেখেছেন নাকি? স্যার বললো না দেখি নাই। গর্ত থেকে বুঝলাম। তিন তলা থেকেই পড়লেই এই সাইজের গর্ত হবে।
-- ওনার কথা সঠিক নয়। কেননা কেউ ছুড়েও মারতে পারে। তাহলে আরও নিচ থেকে পড়লেও এমন গর্ত হতে পারে। আবার মাথার কাঠিন্যও একটি ব্যাপার। কিন্তু আমার কথা সেখানে নয় আমার কথা হলো মজাটা। আসলেই কিন্তু মজা আছে এইসব ভাবতে।
* আরো ধরুন ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক্স। আমরা ভালোই ভয় পাই। কিন্তু এর মজাটাও চরম। যেমন ধরুন ঘড়িতো আমরা সবাই দেখেছি। ভেবেছেন এটি কিভাবে সঠিক সময় দিচ্ছে? আবার আমাদের ক্যালকুলেটর! এই বা এতো নিখুঁত হিসেব করে কিভাবে। আমরা মোবাইল, MP3, MP4 এ অনেক গান শুনি। ভেবেছি আমাদের হেডফোন কিভাবে কাজ করতেছে? কেন এত শব্দ পাচ্ছি? কিভাবে শব্দ হচ্ছে?
--এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানলে দেখবেন যে SSC এর পদার্থ তো ডাল-ভাত। HSC এর অনেক কিছুও ডাল-ভাত লাগবে।
অনেক কথাই বললাম। কি লিখবো বসে কি লিখতেছি। আমাদের আসলে প্রধান কাজ হল সঠিক বিষয়টা ঠিক করা। আপনি ভাবুন সব বিষয় নিয়ে। দেখবেন মজার শেষ নাই। জগতের সব পড়াই মজার। প্রয়োজন এটাকে আহরোন করার। লিখাটি অনেক হচ্ছে বলে এখানে থেমে গেলাম। পরে এটাতেও আপনারা বিরক্ত হতে পারেন। সামনে আরোও লিখবো। আমার ইচ্ছে HSC এর পদার্থের কিছু লেকচার বানানো। যাতে আমরা বুঝতে পারি বিজ্ঞান কত মজার। জানিনা কতটুকু পারবো। কিন্তু চেষ্টা করে যাবো।
▓ আমার মনে পড়ে HSC তে আমি জ্যামিতি ভয় পেতাম। এটাকে সবসময় পরিহার করতাম। কিন্তু হঠাৎ করে এতে মজা পেতে থাকি। আমার ডায়েরী লিখা আছে এক জায়গায়, আজ স্যারের কাছে ক্যালকুলাস এবং জ্যামিতি পরীক্ষায় মার্ক কম পেয়েছি। ৬০ এ মাত্র ২৮.৫ পেয়েছি। কিন্তু আমার খুব ভালো লাগতেছে। যদিও ১.৫ মার্ক ভুল করে ফেলেছি। বাকিটাতো আমি জানিই না। কেননা জ্যামিতি জীবনে করিনাই। উত্তর ও দিই নাই। দিয়েছি ক্যালকুলাসের ৩০ এর উত্তর। :p
কিন্তু বোর্ড পরীক্ষায় জ্যামিতিতে আমি ফুল উত্তর দিই। কেননা এর আগেই মজা পেয়ে যাই। আর একসময় জ্যামিতির কিছু মজা নিয়ে লিখবো। ▓
এখন আর লিখা সম্ভব না। মা ডাকতেছে খেতে। মা-রা খুবই অদ্ভুত। না খাওয়ার আগ পর্যন্ত ডাকতেই থাকবে। আজ এখানেই থাক।আপনারা চাইলে আবার লিখতে বসবো, আরো মজা নিয়ে আরো ব্যাখ্যা সহ। ধন্যবাদ আপনাদের।
(চেক করতে পারিনি লিখা। ভুল হলে ক্ষমা পার্থী)
মোবাইল থেকে শেয়ারের জন্য: http://on.fb.me/t5D52D