আবেগ, অনুভূতি এবং মস্তিষ্ক

শারীরিক ভাবে বলতে গেলে মসৃন পেশী এবং বিভিন্ন গ্রন্থির কারনে শরীরের অন্তর্নিহিত পরিবর্তনই হল আবেগ বা অনুভূতি।
শরীরের বিভিন্ন গ্রন্হি থেকে নিঃসৃত রাসায়ানিক উপাদারগুলো বিভিন্ন আবেগ বা অনুভূতির সময় সক্রিয় হয় এবং রক্ত, স্নায়ুতন্ত্র এবং অন্যান্য তন্ত্রের মাধ্যমে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
বিভিন্ন রাসায়ানিক এবং স্নায়ুবিক ক্রিয়ার জন্যে পরিপাকতন্ত্রের মসৃন পেশী, সংবহনতন্ত্র এবং শরীর গঠনের অন্যান্য উপাদানগুলো বিভিন্ন আবেগ বা অনুভূতির সময় তাদের কাজের ধরন পরিবর্তন করে । এসব উপাদানের স্থান এবং কাজের পরিবর্তনের কারনে কিছু বৈশিষ্ট্য পর্যবেক্ষন করা যায় । যেমনঃ চোখের আইরিশের সংকোচন,ঘামানো,ত্বকের উজ্জ্বলতার পরিবর্তন। আরও কিছু পরিবর্তন আছে যা পর্যবেক্ষন করা যায়না যেমনঃ হৃদস্পন্দন,পাকস্হলীর গতি,লালা উৎপাদনের হার ইত্যাদি ।
মস্তিষ্ক আমাদের শরীরের সবচেয়ে জটিল একটি অঙ্গ যা আমাদের সকল আবেগ বা অনুভূতি কেন্দ্রস্থল হিসেবে কাজ করে , যদিও আমাদের সবসময় মনে হয় সব আবেগ,অনুভূতি বুকের বামপাশে ।

মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের জন্য বিভিন্ন সময়ে আমাদের বিভিন্ন আবেগ, অনুভূতির সৃষ্টি হয় । যেমনঃ অগ্রমস্তিষ্কের সেরেব্রাম
আমাদের চিন্তা,বুদ্ধি,বাকশক্তি,উদ্ভাবনীশক্তি প্রভৃতি নিয়ন্ত্রন করে । থ্যালামাস চাপ,স্পর্শ,যন্ত্রনা ইত্যাদির নিয়ন্ত্রন কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে ।অগ্রমস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস ক্ষুধা,তৃষ্ণা,রাগ,ভালবাসা,ঘুম প্রভৃতি অনূভূতি নিয়ন্ত্রন করে । কাউকে দৃষ্টিকটু অথবা ভালবাসার চোখে একটু আলাদাভাবে দেখতে গেলে চোখের পিউপিল এবং লেন্সের মধ্যে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ঘটানো নিয়ন্ত্রন করে মধ্যমস্তিষ্কের কর্পোরা কোয়াড্রিজেমিনা ।
দৃষ্টি ও শ্রবনজনিত বিভিন্ন উদ্দীপনায় সাড়া দিয়ে মাথা ও ঘাড়কে বিভিন্ন দিকে সঞ্চালিত করাও মধ্যমস্তিষ্কের কাজ ।
এছাড়া পশ্চাৎমস্তিষ্ক হৃদস্পন্দন,শ্বসন,কাশি,রক্তচাপ,লালাক্ষরণ প্রভৃতির স্বয়ংক্রিয় কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে ।

লিখাটি নিয়ে আপনার অভিমত কি?