চাঁদের আকাশে পৃথিবীকে কেমন দেখাবে?

চাঁদের আকাশঃ

পৃথিবীর কোন মানুষকে যদি চাঁদে নিয়ে যাওয়া হয় তখন তার মনোযোগ প্রথমে যে জায়গায় আকৃষ্ট হবে তা হল চাঁদের আকাশ। প্রথমত, চাঁদের আকাশের বুকে বিরাট পৃথিবী দেখে আমাদের অনেক অদ্ভুত মনে হবে। কারণ পৃথিবী ছেড়ে যাবার সময় সে তো আমাদের নিচে ছিল।কিন্তু হঠাৎ তাকে আমরা মাথার উপর দেখব। কারণ মহাবিশ্ব এর সাধারন জগতের কাছে আসলে উপর নিচ বলে কোন কিছু নেই। আসলে সব দিক ই সমান। আমরা পৃথিবীর সাপেক্ষে সব কিছুর বিচার করি বলে আমাদের সবসময় এ রকম মনে হয়। তাই যে পৃথিবীকে নিচে ফেলে এসেছিলাম তাকে মাথার উপর দেখে অবাক হবার কিছু নেই।

এরপর চাঁদের আকাশের অদ্ভুত রঙ সাথে সাথেই আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হবে। কারণ মাথার উপরে সুন্দর সুনীল আকাশের বদলে দেখতে পাওয়া যাবে চাঁদের কাল আকাশ। সেখানে নেই কোনো সকাল সন্ধার গোধূলি। যেখানে আলো সেখানে চোখ ধাঁধান আলো আর যেখানে অন্ধকার সেখানে ঘুটঘুটে অন্ধকার। এর মাঝামাঝি বলতে কোন কিছু নেই। আর চাঁদের আকাশে পৃথিবীর যে চক্র টি ঝোলানো তার আকারটি আসলে অনেক বিরাট। কারণ তার ব্যাস চাঁদের যে ব্যাস তার চাইতে প্রায় চার গুন বড়।

চাঁদের আকাশের পূর্ণিমাঃ

তাছাড়া চাঁদনী রাতে আমাদের আকাশ যেভাবে আলোকিত হয় সেভাবে যদি পৃথিবীর বুক আলোকিত হয় তবে তা চাঁদ থেকে দেখতে চাঁদের চেয়ে ১৪ গুন বড় চক্রবিশিষ্ট মনে হবে। অর্থাৎ চাঁদের আকাশের পূর্ণিমা হবে একটা ১৪ গুন বড় পূর্ণিমা। আসলে যেকোনো ভাস্বর বস্তুর উজ্জ্বলতা শুধু তার ব্যাসের উপর নয় তার প্রতিফলন ক্ষমতার উপরও নির্ভর করে। আর এই প্রতিফলন ক্ষমতা চাঁদের থেকে পৃথিবীর ৬ গুন বেশি।

এসব কারনে পূর্ণ চাঁদ পৃথিবীকে যে পরিমাণ আলো দেয়, পূর্ণ পৃথিবী চাঁদকে তার ৯০ গুন আলো দেবে। তাহলে চাঁদে তখন মানুষ ছোট হরফের যেকোনো লেখা অনায়াসে পরতে পারবে।

চাঁদ থেকে পৃথিবী
চাঁদ থেকে পৃথিবী

আর একটি কথা বলে রাখি চাঁদের আকাশে কোন তারা মিটিমিটি করে না। কারন সেখানে পৃথিবীর মত কোনো বায়ুমণ্ডল নেই। বায়ুমণ্ডলে আলো বিচ্ছুরিত হয় বলেই তারাদের মিটিমিটি জ্বলা আমরা বুঝতে পারি। চাঁদের যেহেতু বায়ুমণ্ডল নেই সতুরাং সেখানে তারারা স্থির আলো দেয়। আমাদের আকাশে যেমন চাঁদ ওঠে আবার ডোবে, কিন্তু চাঁদের পৃথিবী ওঠে ও না আবার ডোবে ও না। সে আকাশের একই স্থানে ভেসে থাকে। এটি হয় চাঁদের বিশেষ গতির কারণে। কি কেমন লাগল চাঁদের আকাশ? একেবারেই অদ্ভুত তাই না? 😀

লিখাটি নিয়ে আপনার অভিমত কি?