ভাইরাস শিকারি ও ভাইরাস সমাচার ।

ভাইরাস এক ধরনের অণুজীব। মানে এরা জীব ও না আবার জড় ও না। এদের কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যেগুলো কেবল মাত্র জীবদের থাকা সম্ভব।যেমনঃ এরা DNA কপি কারার মাধ্যমে নিজেদের বংশবিস্তার করতে পারে।আবার কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যা শুধু জড় বস্তুরই থাকা সম্ভব।যেমনঃএরা কেলাসিত অবস্থায় বছরের পর বছর কোন কিছুর পরিবর্তন না করে জড় বস্তুর মত পড়ে থাকে।তাই বলা হয়ে থাকে যে এরা হল জীব ও জড়ের মধ্যে একটা মধ্যরেখা।কিন্তু এই সামান্য জিনিসগুলোই আমাদের সবথেকে ভয়াবহ রোগ সৃষ্টির জন্য দায়ী।এরা প্রাণী দেহে ঢুকে বংশবিস্তার করে ও আমাদের কোষকে নষ্ট করে দেয়।ফলে আমরা ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হই।

কিন্তু বিগত কয়েক দশকের অভিজ্ঞতার আলোকে বিজ্ঞানীরা এটা বুঝতে সক্ষম হয়েছেন যে এবলা থেকে শুরু করে HIV বা সোয়াইন ফ্লু পর্যন্ত প্রতিটি প্রাণঘাতী ভাইরাস এর ক্ষেত্রে প্রথমে প্রাণীরা এবং পড়ে মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। আর এই প্রাণঘাতী ভাইরাসগুলোর উৎপত্তি হবার জন্য বিশেষ কিছু পরিবেশ খুব সহায়ক। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আদ্র পরিবেশ এবং প্রচুর বন্য প্রাণী এই সব ভাইরাস এর উৎপত্তির জন্য আদর্শ। তাই আফ্রিকার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় পরিবেশে, যেখানে অনেক বন্য প্রাণীর বাস সেখানেই মূলত এই প্রাণঘাতী ভাইরাসগুলোর বেশির ভাগের উৎপত্তি।আর এই জন্যই আমারা এটা বুঝতে পারি যে পরবর্তী কোন প্রাণঘাতী ভাইরাস এর উদ্ভব হলে এটা স্বভাবতই এই বিশেষ অঞ্চলেই হবে। এবং এসব  প্রাণঘাতী রোগজীবাণুর মোকাবেলা করতে হলে এসব এলাকাতে লক্ষ্য রেখে এদের ছড়িয়ে যেতে দেওয়া যাবে না।তবে কাজটি নিশ্চয়ই অনেক সহজ না। কিন্তু আশার কথা হল এই যে অ্যামেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা CIA এর একজন জীবাণুতত্ত্ববিদ নাথান অলফ এর জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি CIA এর জীবাণুতত্ত্ব বিভাগটির প্রধান ও তার নিজের একটি NGO ও এর জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বুঝতেই পারছেন এই ভাইরাস শিকারি জীবাণুবিদ মানব সমাজের জন্য কত বড় কাজ করে যাচ্ছেন। এমন একটা দায়িত্ব কেউ না কেউ না নিলে এটি আমাদের জন্য অনেক বড় একটি ঝুকি হয়ে থাকত। যাই হোক সব কিছুর পরও আমরা এসব জীবানুর থেকে সাবধান থাকব। কারন ঐ জীবাণুর থেকে নিঃসন্দেহে আমাদের জীবন অনেক বেশী মূল্যবান। 😛

লিখাটি নিয়ে আপনার অভিমত কি?

8 COMMENTS

  1. Ebola, HIV, সোয়াইন ফ্লু এসব প্রাণঘাতী ভাইরাসে ক্ষেত্রে প্রথমে প্রাণীরা আক্রান্ত হয়েছে, এই তথ্যটা জানা ছিলো না। নতুন কিছু জানলাম। 🙂

  2. আসলে ভাইরাস,ব্যাকটেরিয়া এসব প্রাণীদের জীবন কাল আমাদের থেকে অনেক কম।তার মানে তারা আমাদের থেকে অনেক তারাতারি মারা যায়(কিছু কিছু ব্যাকটেরিয়ার জীবন কাল কয়েক ঘণ্টা এমন ও আছে)।আর জেনেটিক পরিবর্তন বা মিউটেশন ব্যাপারটি প্রাণীর মৃত্যুর সাথে জড়িত।তাই যেসব প্রজাতি তারাতারি মারা যায় তাদের মধ্যে এই জেনেটিক পরিবর্তন বা মিউটেশন ব্যাপারটি অনেক বেশী ঘটে।আর প্রত্যেক প্রাণীর দেহ আসলে তার নিজের শরীরের পরিচিত বস্তুকনা ছাড়া অন্য কোন অণুজীব বা যেকোনো ফরিন পার্টিকল কে ধ্বংস করতে বা শরীর থেকে বেড় করে দিতে চায়।তাই যখন আমারা কোন ড্রাগ খাই বা কোন প্রাণী তাদের দেহ থেকে প্রাকৃতিক পক্রিয়ায় তার দেহের জীবাণু ধ্বংস করতে চায় তখন এই সব রোগ জীবাণু গুলো মারা যায়।কিন্তু সব মেরে ফেলা সম্ভব হয় না।কারন এদের মধ্যে কিছু প্রজাতির গঠন ভিন্ন হওয়ায় তারা বেঁচে যায়।এবার কিন্তু ঐ প্রাণী বা ঐ ড্রাগ ঐ বেচে যাওয়া জিবানুকে আর মারতে পারে না।তখন ঐ বেচে যাওয়া প্রজাতির জীবাণুটি ঐ প্রাণীর দেহে বা ঐ ড্রাগ এঁর বিরুদ্ধে রেজিস্টেন্ত গ্রোথ করে ফেলে।আর মনের সুখে বংশ বিস্তার করে।তখন ঐ প্রাণীটি ঐ জীবাণুর প্রভাবে মারা যায়।আর ঐ ড্রাগ টি ঐ জীবাণুর বিরুদ্ধে কাজ করে না।এরকম সম্ভব হয় কারন এসব জীবাণুগুলো যেকোনো প্রাণীর তুলনায় বেশী তারাতারি মারা যায় ও বেশী তারাতারি মিউটেশন দ্বারা তার গঠন পরিবর্তন করতে পারে।এখন যদি কোন প্রাণী থেকে কোন ভাইরাস আমাদের শরীরে আসে সেটা আমাদের শরীর মেরে ফেলার জন্য প্রয়োজনীয় বেবস্থা ন্যায়।এবং মেরে ফেলে।কিন্তু জেসব ভাইরাস কোন প্রাণীর দেহে রেজিস্টেন্ত গ্রোথ করে নিজেদের গঠন এমন পরিবর্তন করে যে আমাদের শরীর আর তার বিরুদ্ধে কোন কাজ করতে পারে না তখন আমরা এসব ভাইরাসের দ্বারা ভীষণ ভাবে আক্রান্ত হই।(হয়তো আপনারা জানেন আমাদের দেশে এন্টিবায়োটিক দ্রুত কার্যক্ষমতা হারায়।কারন আমারা না জেনে, যাই হোক, জ্বর বা কাশি একটা হাই ডস এঁর এন্টিবায়োটিক খাই আর তাদের রেজিস্টেন্ত গ্রোথ করার সুযোগ করে দেই।যাই হোক আমাদের দোষ আর কি? আজকাল ডাক্তারেরাও এই কাজ অবলীলায় করে থাকে)।তাই এসব প্রাণী-দেহের ভাইরাস আমাদের জন্য ভীষণ মারাত্মক।সোয়াইন ফ্লু প্রথমে ছিল এক ধরনের পাখির রোগ।এবং এটা আমাদের বেশ কয়েক দশক আগেও একবার আঘাত হেনেছিল।আর HIV ভাইরাস প্রথমে আফ্রিকার জংগলের বানর বানর প্রজাতিতে আক্রমন করে। যেটা আফ্রিকার Guinea-Bissau তে পাওয়া যায়।এই জীবাণুর রেজিস্টেন্ত গ্রোথ করা নিয়ে একটা লেখা আমি দিতে চাচ্ছিলাম কারন এ ব্যাপারে আমারা একেবারেই সচেতন না।যাই হোক কমেন্ট অনেক বড় করে ফেল্লাম।এটাই মনে হয় বিজ্ঞান বাংলার সবচে বড় কমেন্ট!!! 😛 😛 😛 😀 😀

  3. এবং নিঃসন্দেহে সবচেয়ে তথ্যবহুল comment!!
    অণুজীবদের এই resistance growth সম্পর্কে কিছুটা আগে জানা থাকলেও আরো জানতে পারলে ভালোই লাগবে।
    পরবর্তী পোস্টের অপেক্ষায় রইলাম 🙂